বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে পঞ্চগড়ের এক নারীর দায়ের করা মামলায় রোববার (২০ মার্চ) কুড়িগ্রাম সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল জলিলকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। কারাভোগের তৃতীয় দিন ভুক্তভোগী ওই নারীকে বিয়ে করায় তার জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার বুধবার (২৩ মার্চ) বিকেলে জলিলের জামিন মঞ্জুর করেন। এর আগে দুপুরে মামলায় হাজিরা দিতে এসে বিয়ে করার শর্তে জামিন আবেদন করেন তিনি।
জানা যায়, এসআই আব্দুল জলিল কুড়িগ্রাম সদর থানায় কর্মরত। পঞ্চগড় সদর থানায় এসআই হিসেবে কর্মরত থাকাকালীন জলিল ৭ লাখ ৯৫ হাজার টাকা দেনমোহরে ভুক্তভোগী ওই নারীকে বিয়ে করেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ৩০ এপ্রিল জমিসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পঞ্চগড় সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন এক নারী। সেই ডায়েরির তদন্ত করতে গিয়ে তৎকালীন পঞ্চগড় সদর থানার এসআই আব্দুল জলিল বিধবা ওই নারীর সঙ্গে ‘প্রেমের সম্পর্ক’ গড়ে তোলেন। এরপরে তিনি ভুয়া কাবিননামার করিয়ে নিয়ে ওই নারীর সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এক সময় ভুক্তভোগী নারী বিয়ের কাবিননামা চাইতে গেলে জলিল বৈবাহিক বিষয়টি অস্বীকার করেন।
আদালত সূত্রে আরও জানা যায়, ভুক্তভোগী নারী ২০২০ সালের ৬ অক্টোবর পঞ্চগড় নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেন। ২০ জানুয়ারি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। ২৩ জানুয়ারি আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ওই উপ-পরিদর্শকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোওয়ানা জারি করেন। জলিল উচ্চ আদালতের রায়ে ৬ সপ্তাহের জামিনে ছিলেন। তার জামিনের মেয়াদ শেষ হলে তিনি পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে রোববার (২০ মার্চ) দুপুরে আত্মসমর্পণ করে স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন। আদালত তার জামিন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠান। কারাভোগের তৃতীয় দিনে ভুক্তভোগী ওই নারীকে বিয়ে করায় তার জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন, “এতোদিন আমি জলিলের কাছে স্ত্রীর স্বীকৃতি তো দূরের কথা বিয়ের কাবিননামাও পাইনি। আজকে (বুধবার) আদালতে আমি ন্যায় বিচার পেয়েছি। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।”
রাতে মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী মেহেদী হাসান মিলন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।